ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় এমপির স্বাক্ষর ও ডিও জাল করে কাজী পদে নিয়োগ পেতে মরিয়া ওলামালীগ নেতা!

hossain-238x300গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া:
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া ও পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাজী মুহাম্মদ ইলিয়াছ এমপির স্বাক্ষর জাল করে দুইটি পৃথক ভূঁয়া ডিও আইনমন্ত্রী ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে প্রেরণ করেছে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের কাজী হিসেবে নিয়োগ পেতে অপতৎপরতা শুরু করেছে কথিত ওলামালীগ নেতা মৌলভী ক্বারী হোছাইন আহমদ।

খোদ সংসদ সদস্যের স্বাক্ষর ও ডিও জালিয়াতির চাঞ্চল্যেকর এ তথ্যটি সম্প্রতি ফাঁস হলে পেকুয়া জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী মুহাম্মদ ইলিয়াছ ওই মাদ্রাসা শিক্ষক কর্তৃক প্রেরিত ভূঁয়া ডিও বাতিল করার জন্য আইন মন্ত্রীর কাছে চলতি বছরের ২৮ আগষ্ট লিখিতভাবে অবহিত করেছেন।

আইন মন্ত্রী বরাবরে পাঠানো পত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী মুহাম্মদ ইলিয়াছ উল্লেখ করেছেন, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে জমাকৃত মন্ত্রির দফতর ডায়রী নং ১৯৭, তাং ০১/০৭/২০১৪ ইং হোছাইন আহমদ নামক সুপারিশকৃত ডিও লেটার ও সিনিয়র সহকারী সচিব বিচার শাখা-৭ ডায়রী নং১৮৯, তাং ০৯/০২/২০১৫ইং লেটারদ্বয় ভূঁয়া ও জাল। প্রতারণার মাধ্যমে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের উত্তর মেহেরনামা গ্রামের মনির আহমদের পুত্র ও পটিয়া শিয়ান পাড়া আমিরিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক ক্বারী মৌলভী হোছাইন আহমদ আইন মন্ত্রণালয়ে জমা দেন। তাই উক্ত ভূঁয়া ডিও লেটারদ্বয় আমলে না নিয়ে ৪ নং পেকুয়া সদর ইউনিয়নে বিধি বহির্ভূতভাবে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যতিরেকে বিগত ২৬/০২/২০১৬ ইংরেজী তারিখে ৮৯ স্মারকমূলে প্রেরিত প্যানেল বাতিল করে বিধি মোতাবেক প্যানেল প্রদানের জন্য জোর সুপারিশ করা হয় স্থানীয় সংসদ সদস্য স্বাক্ষরিত ওই পত্রে।

সংসদ সদস্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো পত্রে আরো উল্লেখ করেছেন, তার সংসদীয় আসন থেকে প্রায় একশত কিলোমিটা দূরে চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত পটিয়া থানার শিয়ান পাড়া আমিরিয়া এমপিও দাখিল মাদ্রাসায় বিগত ২৪/০৪/১৯৯৪ ইং হইতে অদ্যবধি (ইনডেক্স নং ৩১১৯০৮ ) ক্বারী পদে ওই মাদ্রাসায় চাকুরী করছেন। মাদ্রাসা ক্বারী পদে চাকুরীরত থাকলেও পেকুয়া সদর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিষ্টার (কাজী) লাইসেন্স হাসিলের জন অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মৌলভী ক্বারী হোছাইন আহমদ

জানা গেছে, ওই মাদ্রাসা শিক্ষক দূর্দান্ত প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে খোদ সংসদ সদস্যের স্বাক্ষর ও ডিও জালিয়াতি করে নিজেকে কাজী পদে নিয়োগ লাভের জন্য বিগত ২০১৩ ইং থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছে। ওই মৌলভী এলাকায় এসে কখনো কখনো আইনমন্ত্রীর অত্যন্ত কাছের লোক পরিচয়ে বেশ দাপটের সাথে প্রভাব বিস্তার করে।

এছাড়াও পেকুয়া ও চকরিয়ার কয়েকটি ইউনিয়নের কাজী পদে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ওই প্রতারক মৌলভী কয়েকজনের কাছ থেকে ৪/৫ লক্ষাধিক টাকাও হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কাজী পদে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাসে ও আইনমন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী, বদরখালী ও উজানটিয়ার তিন জন লোকের কাছ কয়েক লাখ টাকাও হাতিয়ে নিয়েছেন।

অভিযুক্ত মৌলভী ক্বারী হোছাইন আহমদের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন ধরনের সদুত্তর দিতে পারেনি। বরং এ বিষয়ে কোন ধরনের রিপোর্ট না করার জন্য অনুরোধ জানান।

 

পাঠকের মতামত: